সালেহ্ বিপ্লব: [২] ভারত সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ শুক্রবার দুপুরে ১২টায় ভারতের রাজ্যসভার লিডার অভ দ্য হাউস এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযুষ গয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন। একইসাথে ভোক্তা অধিকার, খাদ্য ও জনবিতরণ বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত পীযুষ গয়ালের সাথে নতুন পার্লামেন্ট ভবনে তার অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। 

[২.১] হাছান মাহমুদ বৈঠকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা প্রত্যাহার এবং বিশেষ করে রমজান মাসে মূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পীযুষ গয়ালকে অনুরোধ করেন। 

[২.২] ড. হাছান সাংবাদিকদের জানান, আমরা ভারত থেকে যে পেরিশেবল বা পচনশীল আইটেমগুলো আমদানি করি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। রমজানের আগে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ এবং এক লাখ টন চিনি যাতে আমরা পাই, সে সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

[২.৩] তারা পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, সংযোগ, বিদ্যুৎ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, পানি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর জোর দেন। 

[২.৪] ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

[৩] দুপুরে নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনদিনের সরকারি সফরের সমাপ্তি দিনে ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতটি ছিল আন্তরিকতাপূর্ণ। 

[৩.১] রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাকে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং এমন একজন স্ট্রং লেডি, যিনি পর পর চারবার এবং পঞ্চমবারের মত দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, সেজন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এবং নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কাজ করছেন, সেটির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। 

[৩.২] ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, আমি তাকে বলেছি যে;   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে বলেছেন- জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে কেন একজন মহিলাকে দেখতে পাই না? দেখতে চাই। তিনি সেটির সাথেও ঐক্যমত পোষণ করেছেন। এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির সাথে ভারত সবসময় ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।

[৪] এর আগে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকরের সঙ্গে সাক্ষাত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। দিল্লিতে নতুন পার্লামেন্ট ভবনে এই সাক্ষাতে ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। রাজ্যসভার লিডার অভ দ্য হাউস এবং বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযুষ গয়াল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

[৫] পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতের রাজধানীতে পৌঁছান ড. হাছান মাহমুদ। 

[৫.১] সফরের প্রথম দিন বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর সঙ্গে ও তার আগে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান। 

[৫.২] বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের এক দশক’ শীর্ষক একক বক্তৃতা দেন মন্ত্রী। এরপর 'ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব অভ সাউথ এশিয়া'র সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, চিন্তাবিদ, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উন্মুক্ত প্রশ্নের জবাব দেন।